SAHA ANTAR

Published:
2022-02-28 00:12:46 BdST

চকোলেট ভেবে বাবা-মায়ের শক্তিবর্ধক ওষুধ খেল ৫ বছরের শিশু:অপ্রস্তুত ডাক্তার যেভাবে শিশুটির জীবন বাঁচালো


প্রতীকী ছবি

 

ডেস্ক/সংবাদ প্রতিদিন :
শিশুটির জীবন বিপন্ন হওয়ার মারাত্মক ঝুঁকি ছিল।
এমন বিচিত্র ঘটনা এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেস পেয়ে রীতিমতো অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিলেন হাসপাতালের ডিউটি মেডিকেল অফিসার। কি করবেন বুঝে উঠতে পারেননি। সোজা কথায় কিংকর্তব্যবিমুঢ়! তারপর তাৎক্ষণিক বুদ্ধি খাটিয়ে তিনি প্রাণ রক্ষা করেন অবুঝ এক শিশুর।
বড়দের কাজের জিনিস অনেক ক্ষেত্রেই ছোটদের জন্য হয়ে ওঠে বিপজ্জনক। এমনকী মুহূর্তের ভুলে ঘটে যায় চরম ঘটনা! কাগজে খবর হয়- খেলার ছলে ব্লেড, সুচ, পেরেক গিলে ফেলেছে বাড়ির শিশুটি। কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকের তৎপরতায় শিশু বেঁচে গেলেও, সব সময় তা ঘটে না। বিহারের (Bihar) খাগাড়িয়ায় যা ঘটল তা কিন্তু একইরকম ভয়ের, হতে পারে তারচেয়েও বেশি! চকোলেট ভেবে পাঁচ বছরের একটি শিশু খেয়ে ফেলল বাবা-মায়ের যৌনশক্তিবর্ধনক ওষুধ। তারপর?

বড়দের ওষুধের বিষয়ে বারবার সাবধান করে দেন চিকিৎসক। বলাই হয়— ‘বাচ্চাদের থেকে দূরে রাখবেন।’ তারপরেও দেখা যায় গাফিলতি। আর তার ফলেই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটল খাগাড়িয়ার ওই পরিবারে। আসলে ওই দম্পতি এমন জায়গায় যৌনশক্তিবর্ধনক ওষুধটি রেখেছিলেন, যেখানে পাঁচ বছরের ছেলের হাত পৌঁছয়। দম্পতি নিশ্চয়ই ভাবেননি সেই ওষুধকেই চকোলেট ভেবে খেয়ে নেবে ছেলে। যদিও তা-ই ঘটে। ঝলমলে রঙিন মোড়োকের ওষুধকে চকোলেট ভেবে খেয়ে ফেলে শিশু। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার।

 

ওষুধ খাওয়ার কিছু পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুটি। দরদর করে ঘামতে থাকে সে, শরীরে কাঁপুনি শুরু হয়। গোটা শরীরে তুমুল অস্বস্তি বোধ করে সে, যদিও সবটা বোঝাতে পারছিল না। প্রথমটায় ছেলে এমন কেন করছে তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না দম্পতি। এরপরেই তাঁদের চোখ যায় মেঝেতে পড়ে থাকা ওষুধের মোড়োকের দিকে, তখনই বুঝতে পারেন কত বড় বিপদ ঘটে গিয়েছে- ছেলে একসঙ্গে চার-চারটি যৌনশক্তিবর্ধনক ওষুধ খেয়ে ফেলেছে!

সময় নষ্ট না করে ছেলেকে নিয়ে দ্রুত স্থানীয় সদর হাসপাতালে ছোটেন দম্পতি। চিকিৎসককে সবটা খুলে বলেন। ঘটনা শুনে চমকে যান জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকও। তিনি ভেবে উঠতে পারছিলেন কী চিকিৎসা করবেন। যেহেতু এমন ‘রোগী’ সামলানোর অভিজ্ঞতা ছিল না তাঁর। তিনি তড়িঘড়ি পাটনা এমসের এক চিকিৎসক বন্ধুকে ফোন করেন।

 

ঘটনা শুনে পাটনা এমসের চিকিৎসক পরামর্শ দেন, যত দ্রুত সম্ভব শিশুটিকে বমি করাতে হবে। না হলে তার জীবন বিপন্ন হতে পারে। এরপর বমি করানোর জন্য শিশুটিকে নুনগোলা জল খাওয়ানো হয়। কাজ হয় এই টোটকায়। বমি করে দেয় শিশুটি। এবং ধীরে ধীরে সুস্থ বোধ করতে শুরু করে। এবার হাসপাতালে ভরতি নিয়ে চিকিৎসা শুরু শিশুটির। পর্যবেক্ষণে রাখা হয় তাকে।

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, শিশুটির শরীরের রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন যেভাবে বেড়ে গিয়েছিল তাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারত। এযাত্রায় চিকিৎসকদের উপস্থিত বুদ্ধিতে বেঁচে গিয়েছে সে।

আপনার মতামত দিন:


ক্লিনিক-হাসপাতাল এর জনপ্রিয়